FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

Light Fidelity (LiFi) (লাইফাই)

Light Fidelity (LiFi) (লাইফাই)

*

*
মুল জনপ্রিয়তার দিন বুঝি এবার শেষ হতে চলল।
ওয়াই-ফাই ছেড়ে অনেকে কিছুদিন পর Friendsdiary Contest খেলবে সহজ ও উন্নত ওয়্যারলেস প্রযুক্তি লাইফাই দিয়ে ! জানা গেছে ৪ গিগাবাইট স্টোরেজের একটি সিনেমা ডাউনলোড করতে সময় লাগবে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। তাও আবার একটি বৈদ্যুতিক বাতির তলায় দাঁড়ালেই! বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও এমনই এক প্রযুক্তি আসছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে বড় স্টোরেজের গেম, সিনেমা সবই ডাউনলোড হবে চোখের পলকে।

লাইফাই (LiFi) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে লাইট ফিডেলিটি Light Fidelity ব্যবহারিক অর্থে visible light spectrum, ultraviolet and infrared radiation ২০১১ সালে স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গের জার্মান বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী হ্যারল্ড হ্যাস প্রথম ‘লাইফাই’ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন। সর্বপ্রথম ২০১৭ সালের দিকে লাইফাই প্রযুক্তির কিছু ডিভাইস বাজারে আসে ৷ সেই সকল ডিভাইস দিয়ে এর ব্যবহার ব্যাপকহারে শুরু হয় ৷ মূলত ওয়াইফাই এর প্রতিদ্বন্দি হিসেবে আবির্ভাব হয় এই প্রযুক্তির ৷ এ প্রযুক্তিতে আলোর মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিটি দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গকে যোগাযোগ মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে। যেখানে ওয়াইফাইয়ে ব্যবহৃত হয় অদৃশ্য বেতার তরঙ্গ।

যেহেতু লাইফাই ওয়াইফাইয়ের তুলনায় বেশি ব্যান্ডউইথ, ব্যবহারের সহজতা, দক্ষতা এবং সুরক্ষার মতো অনেক সুবিধা দেয়। তাই এ প্রযুক্তি একটা নির্দিষ্ট অঞ্চলের উচ্চ গতির ওয়্যারলেস যোগাযোগের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হতে পারে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, লাইফাই নামক এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্ট্রিট লাইট থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের অটোমেটিক প্রযুক্তির গাড়িও হেডলাইটের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে। আলোর গতি যেহেতু অনেক দ্রুত তাই এ ব্যবস্থায় তথ্য আদান-প্রদানের গতিও খুব দ্রুত হয়। একইসঙ্গে ঘরে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী প্রযুক্তি হতে পারে লাইফাই। ভবিষ্যতে হয়তো দেখা যাবে, বাসায় ব্যবহৃত এলইডি লাইট একই সঙ্গে ঘরকে আলোকিত করছে এবং ঘরের ভেতরে লোকাল নেটওয়ার্ক তৈরিতে অবদান রাখছে। এমনকি বাড়ির প্রতিটি বৈদ্যুতিক বাতিকেই লাইফাই প্রযুক্তির রাউটার হিসাবে ব্যবহার করা যাবে।
মূলত ইন্টারনেট থেকে যে কানেকশনটা আমরা পাই সেটা সবার আগে একটা মডেম এর মধ্যে দিয়ে যাবে এবং পরবর্তীতে সেই মডেম থেকে একটা এলইডি ড্রাইভার এর মধ্যে পৌছে যাবে, যেটা কিনা ব্যবহৃত এলইডি লাইট কে কন্ট্রোল করবে ।

ওয়াইফাইয়ের মতোই লাইফাই একটি ওয়্যারলেস যোগাযোগ প্রযুক্তি। এটি ভবিষ্যতে বহুল ব্যবহৃত ওয়্যারলেস যোগাযোগ প্রযুক্তিগুলোর একটি হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এ প্রযুক্তির মূল বৈশিষ্ট্য হলো পুরোপুরি নেটওয়ার্কযুক্ত, দ্বিপাক্ষিক এবং উচ্চ গতির ওয়্যারলেস কানেকশন।

আজকাল ওয়্যারলেস যোগাযোগের সর্বাধিক ট্রেন্ডিং ডোমেন হলো ওয়াইফাই। প্রতি বছর এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। আর এরচেয়েও উচ্চগতি, দক্ষতা, ব্যান্ডউইথ প্রাপ্তির সুবিধা থাকবে লাইফাইয়ে।

যেভাবে কাজ করে লাইফাই:
এ প্রযুক্তির মাধ্যমে এলইডি বাতি ব্যবহার করে সহজেই ডেটা আদান-প্রদান করা যাবে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, এমনকি হাতের মুঠোফোনটিতেও। লাইফাইয়ের ডেটা ট্রান্সমিশন রেঞ্জ ওয়াইফাইয়ের চেয়ে ১০০ গুণ দ্রুত। এ প্রযুক্তিতে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২২৪ গিগাবাইট পর্যন্ত তথ্য প্রেরণ করা যায়, যেখানে ওয়াইফাইয়ের সর্বোচ্চ গতি প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬০০ মেগাবাইট। তবে এ প্রযুক্তির একটি উল্লেখযোগ্য সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। আলো কোনো দেয়াল ভেদ করে যেতে পারে না। ফলে যে ঘরে লাইফাই নেটওয়ার্ক রয়েছে সে ঘরটি ত্যাগ করলেই গ্রাহক ইন্টারনেট সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তবে একে লাইফাইয়ের সীমাবদ্ধতা হিসাবে নয়, সুবিধা হিসাবেই দেখছেন অনেকে। এর ফলে আবদ্ধ একটা জায়গাতে সীমাবদ্ধ থাকবে এর সিগন্যাল। সুতরাং আলোর মাধ্যমে সম্প্রচারিত ডেটা অনেক বেশি নিরাপদ থাকবে। পাসওয়ার্ড চুরি করে আর কেউ সেটা ব্যবহার করতে পারবে না।

লাইফাইয়ের ব্লক ডায়াগ্রাম:
লাইফাই সিস্টেমে মূলত দুটি অংশ থাকে। ট্রান্সমিটার ও রিসিভার। ট্রান্সমিটার বিভাগে ইনপুট সিগন্যালটি নির্দিষ্ট সময়ের সঙ্গে মডিউল করা যায়। তারপর ০ ও ১ এর আকারে এলইডি বাল্ব ব্যবহার করে ডেটা প্রেরণ করে। এখানে এলইডি বাল্বের আলোকে ০ এবং ১ এর সঙ্গে বোঝানো হয়েছে। রিসিভার প্রান্তে এলইডি আলো গ্রহণের জন্য একটি ফটোডায়োড ব্যবহার করা হয় যা সিগন্যালটিকে আরও শক্তিশালী করে এবং আউটপুট দেয়। অন্যদিকে, রিসিভার প্রান্তে ফটোডায়োডের পাশাপাশি এমপ্লিফায়ারও থাকে। এখানে, ফটোডায়োড এলইডি বাল্ব আলোকে গ্রহণ করে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত করে। সবশেষে অ্যামপ্লিফায়ার ফটোডায়োড থেকে সংকেত গ্রহণ করে এবং তার আরও শক্তিশালী আউটপুট দেয়।
লাইফাই প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে ?

সম্পূর্ণ ওয়্যারলেস পদ্ধতিতে লাইফাই ব্যবহার করা হয় ৷ সাধারণত আমরা যখন বাল্বের মাধ্যমে কোন আলো না জ্বালাই বা কারেন্ট প্রবাহিত না করি, তখন তা জিরো অবস্থায় আছে হিসেবে ধরা হয় ৷ পরবর্তীতে যখন এরমধ্যে দিয়ে সর্বোচ্চ কারেন্ট প্রবাহিত হয় তখন তা ওয়ান অবস্থায় আছে হিসেবে ধরা হয় ৷

আমাদের বসতবাড়িতে ব্যবহৃত এলইডি বাল্বকে দিয়ে লাই ফাই ব্যবহার করা যাবে ৷ আমরা যদি অতিদ্রুত লাইট অন অফ করি, তখন জিরো এবং ওয়ানের ডাটা সিট উৎপন্ন হবে।উৎপন্ন হওয়া এই ডাটা সিটকে রিসিভার এন্ড থেকে রিসিভ করে ওয়াইফাই হিসেবে ব্যবহার করা যাবে ৷

মূলত ইন্টারনেট থেকে যে কানেকশনটা আমরা পাই সেটা সবার আগে একটা মডেম এর মধ্যে দিয়ে যাবে এবং পরবর্তীতে সেই মডেম থেকে একটা এলইডি ড্রাইভার এর মধ্যে পৌছে যাবে, যেটা কিনা আপনার ব্যবহৃত এলইডি লাইট কে কন্ট্রোল করবে ।

এরপর রিসিভার ইন্ড এ ওই লাইট সিগন্যালকে ইলেকট্রিক সিগনালে কনভার্ট করে সেটাকে কম্পিউটারে পৌছে দেওয়া , যার সাহায্যে আপনার কম্পিউটার ইন্টারনেট কানেকশন টা পেয়ে যাবে ৷ আর এটাই হচ্ছে লাইফাই প্রযুক্তির একটি সাধারণ ডায়াগ্রাম।

লাইফাই প্রযুক্তির কিছু সুবিধাঃ
• লাইফাই এর প্রথম সুবিধা হলো এর মাধ্যমে ১০০ জিবিপিএস অব্দি ডাটা আদান প্রদান করা যাবে। WiFi এর তুলনায় LiFi ফ্রিকোয়েন্সি ১০,০০০ গুন বেশি কার্যকর।
• লাইফাই প্রযুক্তির ফলে অনেকগুলো ডিভাইসে একত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় ৷ এবং এটা ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক থেকেও বেশি কার্যকর হবে।
• লাইফাই ব্যবহার করলে ওয়াইফাই এর তুলনামূলকভাবে বেশি সিকিউরিটি পাওয়া যাবে। আপনি পুরোপুরি এটাকে নিজের মত করে কাস্টমাইজ ও কন্ট্রোল করতে পারবেন।
• লাই-ফাই প্রযুক্তি স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ নয় ৷ বরং পরিবেশ ও স্বাস্থ্যবান্ধব একটি প্রযুক্তি ৷ সাভাবিক লাইট ঘরের মধ্যে যেরুপ থাকে এই প্রযুক্তিও তেমনই।
• লাইফাই প্রযুক্তির মাধ্যমে একসাথে ঘর আলোকিত করা ও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় ৷ যেহেতু এই প্রযুক্তি আলোর মাধ্যমে কাজ করে তাই এক সাথে দুইকাজ হয়ে যাবে৷
• এর আরেকটি সবচেয়ে কার্যকর সুবিধা এইযে, ওয়াইফাই এর রাউটার সাধারণত নিদিষ্ট জায়গাকে কেন্দ্র করে চারদিকে সিকুয়েন্সি ছড়িয়ে পরে কিন্তু লাইফাই যেহেতু আলোর মাধ্যমে সিকুয়েন্সি প্রদান করে তাই আপনার চাহিদা মোতাবেক নিদিষ্ট স্থানে এর সিকুয়েন্স্যার ঘনত্ব প্রদান করতে পারবেন।

লাইফাই প্রযুক্তির কিছু দূর্বল দিকঃ
• লাইফাই প্রযুক্তিতে ডেটা স্পিড সাধারণত কম পাওয়া যায়। বাজারে আসার পর প্রথম অবস্থায় যা ছিল ৪৩ এমবিপিএস এর কাছাকাছি ৷ বর্তমানে গিগাবাইট স্পিডের লাইফাই পাওয়া গেলেও কার্যকারিতা তত নয় ৷ তবে ধিরে ধিরে মোডিফাই হয়ে উন্নত হবে বলা যায়।
• লাইভ ভিডিও স্ট্রিম, অনলাইন গেমস খেলতে গেলে একস্ট্রা স্পীড পাওয়া যায়না ৷
• লাইফাই প্রযুক্তির ডিভাইস মার্কেটে ততটা পাওয়া যায়না ৷
• লাই-ফাই এর রেঞ্জ অত্যন্ত কম ৷ কেননা আলো দেয়াল অতিক্রম করতে পারেনা ৷ তাই বন্ধ একঘর থেকে অন্য ঘরে লাই-ফাই ব্যবহার করা যায়না ৷
• লাইফাই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে তুলনামূলকভাবে বেশি খরচ করতে হয় ৷
• লাইফাই ব্যবহার করতে সবসময় লাইটের কাছাকাছি অবস্থান করতে হয় ৷
• লাইফাই চালানোর জন্য সবসময় বাল্ব বা লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হয় ৷
___________________________তথ্যসূত্র: পত্রিকা

*


*




1 Comments 196 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024