"ইন্ এ রিলেশনশিপ" _____________________ ইসলাম থেকে দূরে থাকা হাজার হাজার মুসলিম ভাই-বোন আজকে এগুলোর মাঝে ডুবন্ত। আরও বড় লজ্জার ব্যাপার হল তারা এগুলো প্রকাশ্যে বলতেও লজ্জাবোধ করে না। জীবনকে স্রেফ মজা হিসেবে নিয়েছেন তারা। তাদের মাঝে অনেকে আবার সালাতও পড়েন কিন্তু হারাম সম্পর্ক ছাড়েন না। জিজ্ঞাসিলে বলে- "আমি তাকে বিয়ে করব"। যেই গুনাহর থেকে বাঁচার জন্য বিয়ের হুকুম, বিয়ের আগে সেই গুনাহ্ করার বৈধতা কে দিল? দেখে নেই তার কিছু নমুনা। "In a relationship"— এর অর্থ আমি অমুকের সাথে যিনায় লিপ্ত আছি? "In an open relationship"— এর অর্থ আমি অমুকের সাথে যিনায় লিপ্ত আছি এবং এই কাহিনী সবাই জানে। "Engaged"— এর অর্থ বিয়েও করতে পারছি না, যিনাও ছাড়তে পারছি না। "It’s complicated"— এর অর্থ কার সাথে কখন যিনায় লিপ্ত হয়ে যাই, তার ঠিক নেই। এই টার্মগুলো স্রেফ মজা করার উদ্দেশ্যে দেইনি। যে নারী আপনার জন্য হারাম তার সাথে সকল সম্পর্কই হারাম। তার সাথে কথা বলা হচ্ছে মুখের যিনা, তার কথা শুনা হচ্ছে কানের যিনা, তাকে স্পর্শ করা অঙ্গের যিনা এবং একসাথে ঘোরাঘুরি করা এসব কিছুই যিনার শামিল। মুসলিম নারী ও পুরুষদের জন্য স্বীয় মাহরাম (অর্থাৎ যাদের সাথে দেখা করা বৈধ) ব্যক্তি ছাড়া কাউকে দেখা দেয়া বা দেখা করা জায়েয নয়। একবার হঠাৎ নজর পড়ে গেলে ক্ষমাযোগ্য। কিন্তু প্রথম দৃষ্টিতে আকৃষ্ট হয়ে পুনরায় আবার দৃষ্টিপাত করা ক্ষমাযোগ্য নয়। রাসূলুল্লাহ্ ( ﷺ )-এ ধরনের দেখাকে চোখের যিনা বলেছেন। রাসূলুল্লাহ্ ( ﷺ ) বলেছেনঃ “কোন বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া চোখের যিনা, অশ্লীল কথাবার্তা বলা জিহ্বার যিনা, অবৈধভাবে কাউকে স্পর্শ করা হাতের যিনা, ব্যাভিচারের উদ্দেশ্যে হেঁটে যাওয়া পায়ের যিনা, খারাপ কথা শোনা কানের যিনা আর যিনার কল্পণা করা ও আকাংখা করা হচ্ছে মনের যিনা। অতঃপর লজ্জাস্থান একে পূর্ণতা দেয় অথবা অসম্পূর্ণ রেখে দেয়।" —(বুখারী, মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে আন- নাসায়ী।) রাসূলুল্লাহ্ ( ﷺ ) বলেছেন "পর নারীর সাথে মেলামেশা করা থেকে বিরত থাক। একজন সাহাবী বলল- "দেবরের সাথে ভাবীর মেলামেশার ব্যপারে আপনার মত কী?" তিনি বললেন- "দেবর মৃত্যুর মত ভয়ংকর!" (বুখরী, মুসলিম, রিয়াদুস সালেহীন ১৬২৮) সমস্ত প্রকার যিনা হারামঃ আল্লাহ্ তাআ’লা যিনাকে হারাম ঘোষণা করে বলেনঃ “তোমরা যিনার কাছেও যাবে না। কেননা তা অত্যন্ত নির্লজ্জ এবং খারাপ কাজ।" (সূরা বনী ইসরাঈলঃ ৩২) রাসূলুল্লাহ্ ( ﷺ ) বলেছেনঃ "কোন পুরুষ যখন একজন মহিলার সাথে নির্জনে মিলিত হয়, তখন তাদের তৃতীয় জন হয় শয়তান।" (তিরমিযী, মিশকাত শরীফ) বেগানা নারীকে স্পর্শ করা কতো বড়ো পাপঃ রাসূলুল্লাহ্ ( ﷺ ) বলেছেনঃ "নিশ্চয়ই তোমাদের কারো মাথায় লোহার পেরেক ঠুকে দেয়া ঐ মহিলাকে স্পর্শ করা থেকে অনেক ভাল, যে তার জন্য হালাল নয়।" (তাবারানী, ছহীহুল জামে হাদীস -৪৯২১) আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন- "রাসূলুল্লাহ্ ( ﷺ ) আল্লাহর উক্তি বর্ণনা করেছেনঃ ﺍِﻥَّ ﺍﻟﻨَّﻈْﺮَ ﺳَﻬَﻢٌ ﻣِﻦْ ﺳِﻬَﺎﻡِ ﺍِﺑْﻠِﻴْﺲَ ﻣَﺴْﻤُﻮﻡٌ ﻣَﻦْ ﺗَﺮَﻛَﻬَﺎ ﻣَﺨَﺎﻓَﺘِﻰ ﺍَﺑْﺪَﻟْﺘُﻪُ ﺍِﻳْﻤَﺎﻧًﺎ ﻳُﺠِﺪُ ﺣَﻠَﺎﻭَﺗَﻪُ ﻓِﻰ ﻗَﻠْﺒِﻪِ - “দৃষ্টি হচ্ছে ইবলীসের বিষাক্ত তীরগুলোর মধ্য থেকে একটি তীর। যে ব্যক্তি আমাকে ভয় করে তা ত্যাগ করবে, আমি তার বদলে তাঁকে এমন ঈমান দান করবো যার মিষ্টি সে নিজের হৃদয়ে অনুভব করবে।” (তাবারানী) আবু উমামাহ্ রেওয়ায়েত করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ ( ﷺ ) বলেনঃ ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻳَﻨْﻈُﺮُ ﺇِﻟَﻰ ﻣَﺤَﺎﺳِﻦِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ ﺛُﻢَّ ﻳَﻐُﺾُّ ﺑَﺼَﺮَﻩُ ﺇِﻻَّ ﺃَﺧْﻠﻒ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻪُ ﻋِﺒَﺎﺩَﺓً ﻳَﺠِﺪُ ﺣَﻼَﻭَﺗَﻬَﺎ - “যে মুসলমানের দৃষ্টি কোন মেয়ের সৌন্দর্যের ওপর পড়ে এবং এ দৃষ্টি সরিয়ে নেয়, এ অবস্থায় আল্লাহ্ তাঁর ইবাদাতে বিশেষ স্বাদ সৃষ্টি করে দেন।” (মুসনাদে আহমাদ) যে আল্লাহ্ আপনাকে এতো সুযোগ দিচ্ছেন ফিরে আসার জন্য, সেই মহান প্রতিপালকের এতো অনুগ্রহ স্বত্ত্বেও কিসে আপনাদেরকে বাঁধা দিচ্ছে এসব হারামকে ছেড়ে তাওবা করে তাঁর অনুগত দাস হতে? আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ যারা মুমিন, তাদের জন্যে কী আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য (কুরআন) অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? [সূরা হাদিদঃ ১৬] আল্লাহ্ বলেছেনঃ "যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গুনাহ্ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার, তবে আমি তোমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি গুলো ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব।" (সূরা নিসা : ৩১) মনে রাখবেন, আপনার ভালবাসা এবং বিশ্বাসের অধিকার সর্বপ্রথম আল্লাহ্ সুবহানাহু তা'য়ালার জন্য। আল্লাহকে ভালোবাসুন, তিনি অবশ্যই আপনার জন্য উত্তম কিছু তৈরি করে রেখেছেন। -সংগৃহীত
Posted By: shakib6666
Post ID: 3570
Posted on: 5 years 9 months ago
Authorized by: HiRA