কুরআনের মধ্যে নবিজীর চুল: একটি মিথ্যা ও শয়তানি গুজব ▬▬▬◄❖►▬▬▬ ইতোমধ্যে বহু মানুষ এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছে যে, কুরআনের মধ্যে না কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চুল পাওয়া যাচ্ছে! এবং এ বিষয়টি বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত ভাইরাল! জানা গেলো, এমন গুজব ও শয়তানি কথা এর আগেও নাকি আমাদের দেশে একাধিকার ছড়িয়েছিল! বিষয়টি কারো কারো ছবি চাঁদে দেখার মত জাহালাতপূর্ণ বিষয় এতে কোন সন্দেহ নাই।
সুবহানাল্লাহ!! সত্যি মুসলিম হিসেবে এটি বড় পরিতাপ ও লজ্জাকর বিষয় যে, বর্তমানে অনেক বকধার্মিক ও হুজুগে বাঙ্গালী মুসলিম কুরআনের মধ্যে হেদায়েত ও জীবন চলার পথনির্দেশা না খুঁজে চুল খোঁজায় ব্যস্ত!
রাসূল সাল্লাল্লাল্লাহু আলাই হওয়া সাল্লাম বেঁচে থাকা অবস্থায় তো রোগ-ব্যাধি থেকে বাঁচার জন্য তার চুল ভিজিয়ে পানি খেতে বলেছেন বলে প্রমাণ নেই। তিনি রোগ-ব্যাধি হলে মধু, কালোজিরা, জমজম পানি, হিজামা (কাপিং), আগুনের ছ্যাঁক দেয়া, দুআ, রুকিয়া (ঝাড়ফুঁক) ইত্যাদি নানা উপায় বাতলে দিয়েছেন এবং বিভিন্ন ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করতে উৎসাহিত করেছেন। কিন্তু তার চুল ভিজিয়ে পানি পান করতে নির্দেশ দেন নি।
আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর পূর্বে যে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুনিয়া থেকে চিরবিদায় গ্রহণ করেছেন তার চুলগুলো সব দেশ বাদ দিয়ে কেবল বাংলাদেশের কুরআনগুলোতে নতুন করে উদ্ভাবিত হওয়া কিভাবে সম্ভব হতে পারে!? এটি দ্বীন-ইসলামকে হাসি-তামাশার বস্তুতে পরিণত করা, মানুষকে কুরআন-হাদিসের নির্দেশনা থেকে দূরে সরানো এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর মিথ্যাচার এর অন্তর্ভুক্ত। ইসলামের দৃষ্টিতে সবগুলোই মারাত্মক অপরাধ।
বাস্তবতা হল, প্রত্যেক কুরআনের মধ্যে দু চারটা চুল পাওয়া অসম্ভব নয়। কারণ যারা কুরআন পড়ে তাদের মাথা থেকে অথবা চোখের পাপড়ি থেকে দু-চারটা চুল তার মধ্যে পড়তে পারে। অন্যান্য পাঠ্যবই বা বিছানায় অথবাা ঘর ঝাড়ু দিলেও অনেক চুল পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। সুতরাং কুরআনের মধ্যে এমন দু-চারটা চুল পাওয়া গেলে তাকে নবীজির চুল বলে আখ্যায়িত করা শুধু গোমরাহি নয় বরং মূর্খতা। কেউ এমন কথায় বিশ্বাস করলে বা প্রচার করে থাকলে তার উচিৎ, আল্লাহর নিকট তওবা করা।
যাহোক, এ বিশ্বাসটি একটি মারাত্মক বাতিল ও কুসংস্কারপূর্ণ বিশ্বাস তাতে কোন সন্দেহ নাই। হয়ত কোন ইসলাম বিদ্বেষী চক্র মুসলিমদের বিশ্বাস নিয়ে হাসাহাসি ও তামাশার উদ্দেশ্যে এমন একটি গুজব সর্বত্র ছড়িয়ে দিচ্ছে।
সুতরাং আমাদের কর্তব্য হবে, বিশুদ্ধ উৎস থেকে দীন-ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা, অর্থহীন ও অজ্ঞতা সুলভ আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা এবং মুসলিম হিসেবে দ্বীনের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা।
আল্লাহ আমাদেরকে অজ্ঞতা, কুসংস্কার, বিভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতা থেকে হেফাজত করুন। আমীন। আল্লাহু আলাম। ▬▬▬◄❖►▬▬▬ উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল জুবাইল, সৌদি আরব
Posted By: frozen_heart
Post ID: 4102
Posted on: 4 years 6 months ago
Authorized by: eclipse