#ফাই
গণিতবিদদের মতে, শুধু পৃথিবীর নয়, গোটা মহাবিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ও রহস্যময় সংখ্যাটি হলো ১.৬১৮০৩৩৯৯। এ সংখ্যাটি ফাই বা সোনালী অনুপাত (গোল্ডেন রেশিও) নামে পরিচিত। প্রাচীনকালের মানুষ মনে করতো, এ সংখ্যাটির রয়েছে জাদুকরী ক্ষমতা!
ফাই - এর ক্ষেত্রে অবাক ব্যাপারটি হলো, প্রকৃতি অনেক ক্ষেত্রেই এ অনুপাতটি অনুসরণ করে। যেমনঃ মানুষের শরীর, মুখমণ্ডল, হাত ও পা, হৃদকম্পন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, ডিএনএ, গাছপালা, জীবজন্ত ইত্যাদি আরো হাজারো ক্ষেত্রে।
একটি মৌচাকে স্ত্রী মৌমাছির সংখ্যাকে পুরুষ মৌমাছির সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে আসবে ১.৬১৮! শামুকের প্রতিটি স্পাইরালের ব্যাস পরেরটির সঙ্গে ১.৬১৮ অনুপাতে রয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের বীজ বিপরীত চক্রাকারে বেড়ে ওঠে। প্রতিটি চক্রাকারের ব্যাস পরেরটির সাথে ১.৬১৮ অনুপাতে আছে। শুধু তাই নয়, পদ্মফুল, গাছপালার পাতার বিন্যাস, পোকামাকড়ের বিভাজন -- সবগুলোই বিস্ময়করভাবে এই অনুপাত মেনে চলে!
মানুষের শরীরের গড়নও এই অনুপাতটি মেনে চলে! যেমন আপনার মাথা থেকে পা পর্যন্ত মাপুন, এরপর মাটি থেকে আপনার নাভি পর্যন্ত মাপুন। প্রথম পরিমাপটির সঙ্গে দ্বিতীয় মাপটি ভাগ দিন। ফল আসবে ১.৬১৮।
আপনার কাঁধ থেকে হাতের আঙুল পর্যন্ত মাপা নিয়ে তাকে আপনার বাহু থেকে আঙুল পর্যন্ত দূরত্বের সাথে ভাগ দিন। সোনালী অনুপাত পেয়ে যাবেন। পা থেকে কোমরের মাপকে পা থেকে হাঁটুর মাপ দিয়ে ভাগ দিন। পাওয়া যাবে ১.৬১৮। আঙুলের গিঁট, পায়ের পাতা, মেরুদন্ডের বিভাজন - সবকিছুই এ অনুপাতটি মেনে চলে। বিজ্ঞানী ও চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি দেখিয়েছিলেন, মানুষের শরীর গঠনে সবসময়ই সোনালী অনুপাতের হিসাবে থাকে।
এমনকি শিল্পকলা এবং সংগীতেও আছে সোনালী অনুপাতের ছড়াছড়ি!
মাইকেলেঞ্জেলো, দ্য ভিঞ্চি, আলব্রেখট দ্যুরার এবং আরো অনেক চিত্রশিল্পী ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদের কম্পোজিশনে সোনালী অনুপাত ব্যবহার করেছেন। গ্রিসের পার্থেনন মন্দির, মিসরের পিরামিড, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনের স্থাপত্যেও সোনালী অনুপাত ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও ফাই আছে মোজার্টের সোনাটার স্ট্র্যাকচারে বেথোফেনের পঞ্চম সিম্ফনি এবং বার্তোক, ডেবুস আর শুবার্টের কর্মে।
আমাদের পৃথিবীতে বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ফাই বা স্বর্গীয় অনুপাতের ছড়াছড়ি। আমাদের প্রকৃতিতে ফাই খুবই সুন্দরভাবে বিরাজ করে।
তাই একে সুন্দর সংখ্যা বা স্বর্গীয় অনুপাত বলা যেতেই পারে।
সংগৃহীত