FriendsDiary.NeT | Friends| Inbox | Chat
Home»Archive»

সুব্রতর কাছে আসার গল্প

সুব্রতর কাছে আসার গল্প

*

কিছুদিন আগে নিব্বির সাথে ব্রেক আপ হয়েছে সুব্রত চক্রবর্তীর।তার নিব্বি তাকে গাভী বলে ডাকতো। প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও সুব্রত তার নিব্বির মিষ্টি করে গাভী বলা ডাক মিস করছে। সকালে খাওয়ার সময় সুব্রতের মনে পড়লো তার নিব্বি তাকে বলতো,“তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও গাভী,তুমি না খেলে আমি ও খাবো না।”

একটু কান্না করলো সুব্রত তারপর চোখ মুছে ফেলে তার বৌদির বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। সুব্রত কিছুদিন ধরে নাড়ুর ব্যবসা শুরু করেছে। যদি ও তার ব্যবসার প্রতি তেমন কোন ঝোঁক নাই।তবে তার বৌদির অনুপ্রেরণাতে সুব্রত স্বপ্ন দেখে সে একদিন বাংলাদেশের অনেক বড় উদ্যোক্তা হবে।বৌদির বাসায় গিয়ে দেখে বৌদি ও বৌদির কিছু বান্ধবী অনেক নাড়ু বানিয়েছে। একটা নাড়ু সুব্রতকে তার বৌদি হাতে করে খাওয়াই দেয় এবং তারপর বলে,“ব্যবসা তে মন দাও। দেখো মানুষ অনেক কিছু চায় কিন্তু পায় না। আমি ও একজনকে ভালোবাসতাম কিন্তু তাকে পায় নি কিন্তু দেখো আমার জীবন থেমে নেই। আমি এখন অনেক ভালো আছি। তোমার দাদা আমাকে কত কেয়ার করে।”

এই কথাগুলো সুব্রতকে কিছুটা স্বস্তি দিলো এবং সে নাড়ুগুলো নিয়ে গেলো।অনেকে নাড়ুর অর্ডার দিয়েছে।নতুন বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি নাড়ু নিয়ে যাবে বলে সুব্রতের বন্ধু মুন্না ৫ কেজি নাড়ু অর্ডার করেছে।কিছুদিন পর কাতার চলে যাবে বলে সুব্রতের এক সময়ের বড় ভাই মাসুদ ৫ কেজি নাড়ুর অর্ডার দিয়েছে।ছ্যাঁকা খাওয়ার পর নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে চাওয়া সুব্রতের কাকু মিজান ২ কেজি নাড়ু অর্ডার দিয়েছে।কারণ আজ তার প্রিয়তমার জন্মদিন।সুব্রত সব নাড়ু প্যাকিং করে কুরিয়ার সার্ভিসে দিয়ে আসলো।তারপর কুরিয়ার সার্ভিস থেকে বাড়ি গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলো।

বিকালে সুব্রত হাটছিলো একাকী। সুব্রত লক্ষ্য করলো একটা মেয়ে তাকে অনেকক্ষণ যাবত অনুসরণ করছে। সুব্রত বললো,
“কিছু বলবেন?” মেয়েটা বললো, “আসলে আমি অনেকদিন থেকেই আপনাকে চিনি। আমি আপনার থেকে অনেকবার নাড়ু নিয়েছি পরিচয় গোপন করে।”

“আপনি আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন,কেন জানি আমার মনে হয় আপনি প্রচন্ড একা। জানেন আমি ও আপনার মতো একা।আমার খুব ইচ্ছা করতো আপনার সাথে একদিন কথা বলবো।কখনো সাহস হয় নি।আজকেই সেই দিন আমি আপনার সাথে কথা বলতে পারছি।আমি আপনাকে ভালোবাসি। আমরা কি পারিনা একটি সুন্দর জীবন শুরু করতে? আমি অনেক ভালো নাড়ু বানাতে পারি,,কাচ্চি রান্না করতে পারি অনেক ভালো। আমাদের অনেক বড় ব্যবসা হবে।”

এরপর সুব্রত কান্না করতে করতে মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরলো।আর বললো, “এখন থেকে তুমি আমার আর আমি তোমার।”

“এই সুব্রত ওঠ,আর কত ঘুমাবি?কতক্ষণ ধরে ডাকছি।” সুব্রত চোখ খুলে দেখছে তার মা তাকে ডাকছে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে, এই সময়ে সে প্রাইভেট পড়াতে যায়। কিন্তু সেই মেয়েটা কোথায় গেলো?? তার মানে এতোক্ষণ সব স্বপ্ন ছিলো। সুব্রত বুঝতে পারলো কুরিয়ার থেকে বাড়িতে এসে খাওয়ার পর একটু শুয়েছিলো।আর তখনই স্বপ্ন দেখেছে। তবে সুব্রতের জীবনে এমন স্বপ্ন তো সত্যি ও হতে পারে,তার জন্য তো সুব্রতকে ধৈর্য্য ধরতে হবে।


*




10 Comments 335 Views
Comment

© FriendsDiary.NeT 2009- 2024